অ্যাভাটার ২ মুভি রিভিউ way of water movie review

avatar way of water - অ্যাভাটার ২ মুভি রিভিউ way of water movie review
Avatar 2 মুভির টাইটেল Avatar: The Way of Water সেটা সবাই ইতিমধ্যেই জানেন।
এই পোস্টে Cinemacon ইভেন্টে দেখানো টিজারে কি কি আছে তা আলোচনা করা হবে। এটা সেখানে উপস্থিত থাকা একজনের আর্টিকেল থেকে অনেক সময় নিয়ে বাংলায় অনুবাদ করেছি আপনাদের সুবিধার্থে।
” টিজার শুরু হয় নাভির একটি পরিবার যেখানে কিছু ছোট বড় Na’vi চারপাশে দৌড়াচ্ছে এবং লাফাচ্ছে। Neytiri এর মুখের কাছে একটি ক্লোজ আপ শট দেখা যায় যেখানে সে যত্ন সহকারে কিছু দেখছে। এরপর উপর থেকে একটি শটে চারটি নাভি বিশাল সমুদ্রের উপর দিয়ে বানশি নিয়ে উড়তে দেখা যায়।
তারা সমুদ্রের বড়, বড় প্রবাল কাঠামোর উপর দিয়ে উড়ে যায় এবং চারপাশে অনেক নাভি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এতটুকুর ভিতর কোনো কথা নেই। কেবল জেমস হর্নারের থিমের ইঙ্গিত সহ মিষ্টি, শান্ত সঙ্গীত।
Avatar 2 way of water movie review
(image credit: 20th Century)
আমরা তখন মানুষের সাথে একটি শিল্প এলাকা দেখতে পাই এবং সেখানে সম্পূর্ণ পোশাক পরা নাভি একসাথে হাঁটছে এবং কথা বলছে। কয়েকটি হেলিকপ্টার টেক অফ করছে। এরপর দেখা যায় পানির নিচে নাভির সাঁতারের শট। এই সিক্যুয়েলের সাথে এটিই সবচেয়ে বড় জিনিস।
কিন্তু এমনও মনে হয় না যে সেখানে পানি (water) ছিল। আপনি জানেন যে এটি জল, এটি সমস্ত নীল এবং সেখানে মাছ এবং একটি প্রাণী সাঁতার কাটছে, তবে দেখে মনে হচ্ছে তারা বাতাসে সাঁতার কাটছে। যদিও ফুটেজটি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের এবং আমি থিয়েটারে আরও পিছনে ছিলাম। এটি দেখতে সুন্দর কিন্তু পানির মতো 100% বিশ্বাসযোগ্য নয়।
ট্রেলারটি তখন কিছুটা মন্টেজের মধ্যে র‌্যাম্প করে। কিছু শটের মধ্যে জ্যাক এবং নেইতিরি প্লাবিত সাবমেরিনের মতো দেখতে একটা যানের ভিতর আটকা পরেছে দেখা যায়। তিমিদের পাশাপাশি নাভি সাঁতার কাটার দৃশ্য দেখা যায়, এমনকি জ্যাক একটি শটে জলের উপর ভাসছে কিন্তু তারপরে আপনি বুঝতে পারবেন যে সে এমন একটি প্রাণীর উপর চড়ছে যা পানি এবং বাতাস উভয়েই উড়তে পারে।
ওহ, এবং জ্যাকের এখন একটি সামরিক বাহিনীর মতো হেয়ারকাট আছে। পুরো জিনিসটি প্রায় 90 সেকেন্ড চলে। 6 মে অফিশিয়ালি আপনারা থিয়েটারে Doctor Strange 2 মুভির সাথে এটা দেখতে পারবেন। আর 13 বছরের অপেক্ষার পর এই ট্রেইলারটি কি আবার Avatar এর জন্য মানুষকে উত্তেজিত করতে যথেষ্ট হবে?”
কানাডিয়ান পরিচালক জেমস ক্যামেরন স্যারের ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া কালজয়ী টাইটানিক দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে আয় করা মুভি ছিলো।২০০৯ সালে সেই রেকর্ড ব্রেক করে ফেলে জেমস স্যারের আরেক মুভি অ্যাভাটার।
অবশ্য ঠিক ৯ বছর পর অ্যাভাটারের রেকর্ড ব্রেক করতে সমর্থ হয় মার্ভেলের অ্যাভেঞ্জার্স: ইন্ডগেম তাও ২ বার রিলিজ দিয়ে।তার ঠিক দুই বছর পর অর্থাৎ গতবছর চীনে রি-রিলিজ দিয়ে সেই সিংহাসন পুনরায় দখল করে নেয় অ্যাভাটার।জেমস স্যারের রেকর্ডে কেউ যদি ভাগ বসাতে পারে অথবা টপকাতে পারে তাহলে সেটা একমাত্র মার্ভেলের দ্বারা সম্ভব।
তাছাড়া আর কাউকেই দেখছি না যারা উনার আশেপাশেও ঘেঁষতে পারবে।জেমস ক্যামেরন,ক্রিস্টোফার নোলান,মার্টিন স্করসিস,কুইন্টন তারান্তিনো,স্টেভেন স্পেইলবার্গ,ডেভিড ফিঞ্চার এনারা হচ্ছেন একেকটা ব্র্যান্ড।উনারা নিজেদের এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন যে উনাদের সিনেমার কাস্টদের চেয়ে উনাদের নিয়েই বেশী আলোচনা চলে।
চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বরে আসতে চলেছে জেমস স্যারের আরেক তোপ অ্যাভাটার ২ যেটি বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাবে ১৬০ টি ভাষায়।এর মানে আবারো বক্স অফিসে তোলপাড় করতে যাচ্ছেন জেমস স্যার।
অ্যাভাটারের আরো তিনটি সেকুয়েলও লাইনআপে রয়েছে যেগুলো আসবে যথাক্রমে ২০২৪,২০২৬ এবং ২০২৮ সালে। অর্থাৎ ১৩ বছর পূর্বে বক্স অফিসে যে আগুন ধরালেন জেমস স্যার তা সহজে নিভতে দিচ্ছেন না উনি🔥🔥💖💖

অ্যাভাটার ২ মুভি রিভিউ

#Spoiler_Alert — Avatar মুভির নাম থেকেই এটা স্পষ্ট যে জেমস ক্যামেরন হিন্দু ও খ্রিষ্টিয় মিথলজিতে – পাপে পূর্ণ দুনিয়াকে বাঁচাতে নতুন অবতারের আগমন বা পুনর্জন্মের আইডিয়া থেকে মুভিটি বানিয়েছেন। ১৩ বছর পর যে সিকুয়েলটি এলো, এখানেও কুমারী মেরির গর্ভে যীশুর জন্ম বা ইয়াশোদার পেটে কৃষ্ণ অবতারের জন্ম কাহিনীকে ‘কিরি’ চরিত্রটির মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া মুভির মূল প্লট ‘তিমির মগজ থেকে অমরত্ব লাভের নির্যাস’ আহরণের মধ্য দিয়ে ‘সমুদ্র মন্থনে’র মিথলজিকাল কাহিনী এবং মানুষের বিরুদ্ধে নাবিদের লড়াইয়ে– বৃটিশদের বিরুদ্ধে ভারতীয় বিপ্লবীদের আন্দোলনকে ট্রিবিউট দেয়া হয়েছে।

এভাটার দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার শুরু হওয়া মাত্রই আমাদের একটা কনফিউজিং ইনফর্মেশন দেয়া হয়। ১ম মুভির শেষে ডঃ গ্রেস অগাস্টিনের গুলি খাওয়া দেহটিকে আইওয়ার শেকড়ে জড়িয়ে তার প্রাণশক্তি অন্য একটা নাবির দেহে ট্রান্সফার করা হয়েছিলো। সেই নাবিটি কখনো জেগে ওঠেনি। তাকে একটা কাঁচের বাক্সে ফ্লুইডে ডুবিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। সেই ডুবন্ত নাবিটি কোন একভাবে প্রেগনেন্ট হয় এবং জন্ম নেয় কিরি। কিরির হাতে অন্য মানুষের মত ৫টি আঙ্গুল। কিন্তু সে অন্য কোন নাবিদের চেয়ে আইওয়ার সাথে বেশি কানেকশান ফিল করে। প্রকৃতি, পরিবেশ, প্রাণী, সাগর তলদেশে সে অন্য নাবিদের চেয়ে বেশি কম্ফোর্টেবল। মুভির মাঝামাঝি সময়ে ‘কিরির বাবা কে’ সেই প্রশ্ন করা হলেও উত্তর দেয়া হয় নি।

আমরা থিওরি করতে পারি, ডাঃ গ্রেস অগাস্টিন মৃত্যুর সময় প্রেগনেন্ট ছিলেন? অথবা যে নাবিটির দেহে তার সত্ত্বাকে ট্রান্সফার করা হয়েছিলো সে প্রেগনেন্ট ছিল? কিংবা যে আইওয়া সত্ত্বা দ্বারা পুরো প্যান্ডোরা গ্রহ পরিচালিত হয়, সেই আইওয়া তার পাওয়ার ট্রান্সফার করেছে কিরির মধ্যে এবং ডা গ্রেসের পেটের মাধ্যমে জন্ম হয়েছে কিরির।

কেননা আমরা মুভির শেষ দিকে দেখেছি, কিরি প্যান্ডোরার প্রাণীদের টেলিপ্যাথির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এমনিতেই নাবিদের চুলের সাথে চুল মিলিয়ে প্রাণীরা বণ্ডিং করে। কিন্ত কিরি স্বয়ং মাদার নেচারের মত মনের শক্তিতে সব প্রাণীদের কন্ট্রোল করতে পারে। আশা করি Avatar 3 The seed Bearer এ আমরা কিরির রহস্য জানবো। অবশ্য এটা তো অনুমিত মেরির পেটে জন্ম নেয়া যীশু বা ইয়াশোদার পেটে জন্ম নেয়া কৃষ্ণের মতই কিরির জাদুকরি ঐশ্বরিক পাওয়ার আছে।

এভাটার প্রথম মুভিতে পৃথিবীর মানুষ- আইওয়া গাছের নিচে মূল্যবান এক খনিজের জন্য হামলা করেছিলো জঙ্গলে। এই মুভিতে মানুষ লেগেছে সাগরের বুকে প্যান্ডোরার তিমির পিছনে। প্যান্ডোরার সাগরে পূর্ণবয়স্কা তিমির মগজের মধ্যে কয়েক মিলিগ্রাম মূল্যবান তরল নির্যাস আছে। এই নির্যাস মানুষকে অমর করে। তাই পৃথিবীর মানুষ প্যান্ডোরার সাগরের বুকে বিশালাকায় একেকটি তিমিকে নির্মম ভাবে হত্যা করে

তাদের মুখের ভিতরে প্রবেশ করে মগজ থেকে কয়েক গ্রাম নির্যাস সিরিঞ্জ দিয়ে বের করে নেয়। মূলত হিন্দু পুরাণের সমুদ্র মন্থনের কাহিনী থেকে এই অংশটি নেয়া হয়েছে। অসুর ও দেবতা মিলে হলাহল সাপকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে অমৃত বের করার গল্পটি নিশ্চয় সবাই জানেন। অমৃত বের করতে গিয়ে সাগরের বুকে ছড়িয়ে পড়া বিষ নিজের কন্ঠে ধারণ করে নীলকন্ঠি হয়েছিলেন শিব। Avatar 4 The Tulkun Rider এ জ্যাক স্যালি ও নেইত্রীর ২য় পুত্র লোয়াক কি এমনি নীলকন্ঠি হবে?

এছাড়া বিগত সহস্র বছর ধরে নীল তিমির মাথার তেলে মোমবাতি শক্তিশালী জ্বালানি তৈরীর জন্য দুনিয়া জুড়ে শত কোটি স্পার্ম তিমি ও নীল তিমি মানুষ মেরে ফেলেছে। ১৯৮৬ সাল থেকে তিমি শিকার নিষিদ্ধ হলেও জাপান এই নিষেধাজ্ঞা মানে না। জাপানে তিমির মাংস বিশেষ করে বিলুপ্ত প্রায় মিং তিমির মাংস খুবই জনপ্রিয় খাবার। এজন্য বছরে প্রচুর তিমি শিকার করে জাপান। জেমস ক্যামেরন প্রথম মুভিতে যেমন করে ইরাকের তেলের জন্য আমেরিকান হামলার প্রেক্ষাপটে Avatar রূপক ধরেছিলেন- তেমনি করে অতীতের তিমির মাথার তেলের মোম জ্বালানির জন্য নির্মম হত্যা ও বর্তমানে জাপানের তিমি খাওয়াকে ক্রিটিসাইজ করছেন Avatar 2 তে।

এই মাত্র বললাম এভাটার মুভির মাধ্যমে জেমস ক্যামেরন মূলত সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা যে অন্যান্য দেশে তেলের জন্য হামলা করে সেই বিষয়টাকে ক্রিটিসাইজ করেছেন। প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য বৃটিশরাও ভারতে এসেছিলো। রেলরোড বানিয়ে উপমহাদেশ থেকে কোটি কোটি টাকার সম্পদ পাচার করেছে বৃটিশ রাজ। বিপ্লবীরা প্রায়শই বৃটিশদের অস্ত্র ও সম্পদ বোঝাই ট্রেনে হামলা করে তাদের অস্ত্র দিয়েই বৃটিশদের আক্রমণ করতো। এভাটার দ্য ওয়ে অফ ওয়াটারের মুভির প্রথম দিকেই জ্যাক সালির নেতৃত্বে জঙ্গলের নাবিরা হামলা করে মানুষের তৈরি রেলগাড়ির উপর। অস্ত্র কেড়ে নেয় পরবর্তী বিপ্লবের জন্য। —

জেমস ক্যামেরন এতটা স্পষ্ট করে ভারতীয় ইতিহাস ও নানা ধর্মীয় পুরাণকে এভাটারের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন তা সত্যিই আগ্রোহোদ্দীপক। এখন আমাদের সময় আমাদের – এই অঞ্চলের ইতিহাস ও মিথ নিয়ে আমাদের চর্চা করার। হলিউড বানাচ্ছে বানাক। আমরা কবে বানাবো?

Movie Reviewer: MD Khairul Bashar Badhon

1 thought on “অ্যাভাটার ২ মুভি রিভিউ way of water movie review”

  1. MD: Ashikur Rahman

    আমি সিনেমা সিরিজের ব্যাপারে সর্বভুক হলেও, সায়েন্স ফিকশন বা কল্পবিজ্ঞান আমার ভীষন প্রিয়। Avatar তো শুধু আবার সায়েন্স ফিকশন নয়, Action, Adventure, Fantasy কি ছিল না! রূপকথার আখ্যান ছিল একখান।দ্বিতীয় ইনস্টলমেন্টে সবকিছুই দ্বিগুণ হয়ে ফিরে এসেছে যেন। তেরো বছরের অপেক্ষা সার্থক। এ জিনিস চাক্ষুষ করা ভাগ্যের। সুযোগ পেলেই তাই বড়পর্দায় 3D তে উপভোগ করে আসুন।গল্পেও তেরো বছরের ব্যবধানে জেক সালির পরিবার বেড়েছে। এসেছে নতুন অনেকগুলো ক্যারেকটার। কিন্তু তাদের সাথে একাত্ম হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। চেনা গল্প তাই আরো কাছের হয়ে ওঠে। পারিবারিক প্রেক্ষাপটটা তাই অত্যন্ত নিজের মনে হয়। সমস্ত কিছুর ওপরে একজন পিতার কর্তব্য কি, তা স্বয়ং মুখ্যচরিত্রের ভয়েস-ওভারে শুনতে গায়ে কাঁটা দেয়।প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এইধরনের সিনেমাকে যে কতখানি রিয়েলিস্টিকভাবে দেখানো যায়, তা জেমস ক্যামেরন প্রথম সিনেমায় দেখিয়েছেন। এবার চ্যালেঞ্জ ছিল জলের জগৎকে কতটা বাস্তব করে তুলতে পারবেন! এখানেই ছবির ইউএসপি। কোথাও এতটুকুও মনে হয়নি যে চোখের সামনে যা দেখছি, সব কৃত্রিমভাবে বানানো। গতবার প্যান্ডোরার জঙ্গল দেখে যেমন হাঁ হয়ে গেছিলেন, এবার জলের তলার জগৎ হাঁ এর ব্যাস বাড়িয়ে দেবে।অ্যামাজন প্রাইম, নেটফ্লিক্স, হইচইয়ের যুগে মানুষ যখন হলমুখী না হয়ে, মোবাইলের পর্দাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন, তখন এই ধরনের সিনেমাই মানুষকে আবার হলে ফিরিয়ে আনবে, আনবেই। "সিনেম্যাটিক এক্সপেরিয়েন্স" এর জন্য। যে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো সম্ভব নয়। তাই যান, হলে গিয়ে স্বাদ নিয়ে আসুন।শেষমেষ একটা কথা বলি। নেগেটিভ দিক আছে কিনা জানিনা। তবে আমার তো চোখে পড়েনি। আর সিনেমার দৈর্ঘ্য নিয়ে এদিক ওদিক যে কথা শোনা যাচ্ছে, ওটা কানে দেবেন না। কারণ যেসব দৃশ্যের জন্য সিনেমার লেন্থ বেড়েছে, সেগুলোই আমার বেশি উপভোগ্য লেগেছে। পৃথিবীতে বসে "প্যান্ডোরা" নামক গ্রহের বিস্ময়কর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে কার না ভালো লাগে। হোক না সে যতই "কল্পনার"। এই জন্যই তো "কল্পনার" বিজ্ঞান আমার এত প্রিয়। ❤️❤️#AvatarTheWayOfWater #Avatar2 #JamesCameron #Hollywood

Leave a Comment

Total Views: 437

Scroll to Top