Disclosure: This content is reader-supported, which means that if you click on some of our links. then we may earn a commission.
* নো স্পয়লার *
অর্ধেক তৃপ্তি অর্ধেক অতৃপ্তি
************************
গ্রাম-বাংলার ছবি এখন কমে গেছে। বিশেষ করে ডিজিটাল আমল শুরুর পর গ্রাম-বাংলার ছবি কম হচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ নায়ক শাকিব খানও গ্রামীণ গল্পের ছবি কম করে। তবে শাকিব গ্রামের ছবিতেও দারুণ পারফরম্যান্স করেছে অতীতে যার মধ্যে 'সুভা, নাচনেওয়ালী, সমাধি, ডাক্তারবাড়ি'-র মতো ছবি আছে। বড় বিরতির পরেই তার এ ধারার ছবি এলো 'গলুই'। পরিচালক এস এ হক অলিক এবং এই পরিচালকের সাথে এটি তার দ্বিতীয় ছবি।
##Also Read: ইদের ছবি 'শান'মুভি রিভিউ
'গলুই' শাব্দিক অর্থে নৌকার মাথার সরু অংশটি যেটি থাকে হাল ধরে রাখার জন্য, নৌকার দুই দিকেই থাকে এবং একদিকের সাথে অন্যদিকের একটা ভারসাম্য বজায়ের বিষয় থাকে। পরিচালকের ভাষ্যমতে এ গলুইকে তিনি জীবনের দর্শনে দেখিয়েছেন যেখানে হাল ঠিকমতো ধরে রাখতে না পারলে জীবনের গল্প বদলে যেতে পারে। ছবির নামের দর্শনের সাথে ছবির মিল আছে।
গল্পে চিরাচরিতভাবে সমাজের উঁচু, নিচু অংশের প্রেমের বিষয় এসেছে। নাক সিঁটকানোভাবে যদি কেউ বলে তবে এসব গল্প দেখতে দেখতে তারা বিরক্ত এর থেকে বের হয়ে ভিন্নভাবে প্রেমের গল্প বলতে হবে। তবে বাস্তবিকভাবে দেখলে গ্রামীণ সমাজের বেশিরভাগ প্রেমের গল্পই এখনো এমন। প্রভাবশালী ও অসহায় শ্রেণির মধ্যে প্রেম থাকেই। মূল বিষয়টা হচ্ছে আপনি চলচ্চিত্রে সেটিকেই যদি ওভারঅল মানসম্মতভাবে তুলে ধরতে পারেন তবে সেটাই প্রশংসা পাবে এবং শিক্ষিত শ্রেণির কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে তবে নেহায়েৎ বিনোদন নেয়া দর্শক যারা ছবির নির্মাণগুণ সম্পর্কে তেমন ধারণা রাখে না বা ভাবে না তাদের কাছে ভালো লাগাটা ভিন্ন। এই যখন বাস্তবতা তখন 'গলুই' কেমন হয়েছে সেটাই এখানে কথা।
ছবিতে শাকিব খানের বাবা তার পছন্দের গাছ কেটে নৌকা বানানোতে শাকিব সে নৌকা ধরে না অভিমানে। বাবা চলে গেলেও অভিমান যায় না তার। রাজকুমারীর সাথে শাকিবের পরিচয়ের পর থেকে ধনী-গরিবের মধ্যকার প্রেমের বিষয়টি সামনে আসে। তারপর সমাজের প্রচলিত বাস্তবতা এবং একটা পরিণতি ঘটে।
এই সাধারণ গল্পকে মেকানিজমের গুণ দিয়ে উপস্থাপন করলে ছবিটি কেমন হত সেটাই কথা। পুরোপুরি পরিচালক তা পারেননি। ছবিটি অর্ধেক তৃপ্তি দিলেও অর্ধেকটা অতৃপ্তিতে ভরা। ছবিতে প্রধান শক্তি ছিল অভিনয়। লুকের সীমাবদ্ধতা শাকিব খানেরও ছিল কিন্তু তার অভিনয়ে কোনো কমতি নেই। শাকিবকে ডার্ক আরেকটু রাখলে গ্রামীণ আবহে দারুণ লাগত। তার অভিনয় অন্যসব গ্রামীণ ছবির মতোই দারুণ। তার বিপরীতে পূজা চেরী পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছে। রাজকুমারীর যেমন শরীরী ভাষা থাকার দরকার সেটাই সে দেখিয়েছে আবার প্রেমে পড়ার পর বদলে গেছে পুরোপুরি। শাকিব-পূজার রসায়নও ভালো। শাকিবের বাবার চরিত্রে সুব্রত, আজিজুল হাকিম, সুচরিতা, আলীরাজ কারোরই অভিনয়ের কোনো কমতি নেই কমতি শুধু ছবির উপস্থাপনে। নৌকা বাইচ দেখার সময় চোখ আটকে যায় নদী, নৌকা, মাঝি এসব সৌন্দর্যে আবার বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করার পর যখন বৃষ্টি এলো নায়ক-নায়িকার কথোপকথন বৃষ্টির মধ্যে জমে উঠেছে সেগুলো খুব ভালো লাগার অনুভূতি দেয় কিন্তু পরক্ষণেই আবার ম্যাড়মেড়ে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, স্লো স্টোরি টেলিং শুরু হয়ে যাচ্ছে। এভাবে অর্ধেকটা অতৃপ্তি দিয়ে যায়।
সংলাপে কাব্যিকতা ছিল এবং সত্যিকার অর্থেই খুব ভালো কিছু সংলাপ ছিল :
১. ভালোবাসা হলো অর্ধেক সুখ অর্ধেক জ্বালা
২. কাউকে যখন ভালো লাগে তখন পৃথিবীর সবকিছুই ভালো লাগে। চাঁদ, ফুল, আলো এমনকি অন্ধকারও।
৩. মনের ভুলের সাজা জীবনভর।
৪. দুনিয়ার পথ নানা খানাখন্দে ভরা, পা ফেলতে হয় বুঝ কইরা।
গানের মধ্যে 'তুই আমি দুই' সেরা এবং 'দেওয়া রে' ভিন্নরকম।
ছবির ফিনিশিংটা বাস্তবসম্মত ছিল। ফিনিশিং-এর জন্য পরিচালক ধন্যবাদ পাবে।
#Also Read: মিশন এক্সট্রিম মুভি রিভিউ
'গলুই' গ্রাম-বাংলার ছবিতে শাকিব খানকে ফিরিয়েছে হয়তো সামনের দিনগুলোতে তাকে আরো দেখা যাবে এ ধরনের ছবিতে। সাথে পরিচালক এস এ হক অলিকেরও আরো বেশি সিরিয়াস হতে হবে গ্রামীণ ছবির গল্পে ভিন্নতা এবং আরো মানসম্মত কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে।
রেটিং - ৬/১০
Disclosure: This post May contains affiliate links that support our Blog.
When you purchase something after clicking an affiliate link, we may receive a commission.
Also Note That We Are Not Responsible For Any Third-party Websites Link Contents
On Category:
বাংলা চলচ্চিত্র