মিশন এক্সট্রিম মুভি রিভিউ
ঢাকা এটাক ২ নাকি মিশন এক্সট্রিম?
২০১৭ সালে ঢাকা অ্যাটাক সিনেমা মুক্তির পর পরেই, পুরো দেশের সিনেমা হল গুলাতে ব্যাপকভাবে ভিড় পরে যায়।
{tocify} $title={Table of Contents}
দর্শকদের কাছে বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ অ্যাকশন থ্রিলার জেনরের সিনেমা হিসেবে বাজিমাত করে বক্স অফিসে। প্রায় ৭কোটি+ টাকা আয় করে ঢাকা অ্যাটাক চলচ্চিত্রটি।
এই জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় লেখক ও পরিচালক সানী সানোয়ার জানায়, “যে ঢাকা অ্যাটাক এর দুটি সিক্যুয়েল আসবে। তবে সেগুলি ঢাকা অ্যাটাক ২ ও ৩ না হয়ে নাম দেওয়া হবেঃ ‘মিশন এক্সট্রিম পার্ট ১ ও ২।”
এই মিশন এক্সট্রিম ২০১৯ এ মুক্তি পাবে। তবে যথা সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায়, মুক্তির তারিখ ২০২০ এর ঈদুল ফিতরে ঠিক করা হয়
কিন্তু করোনা ভাইরাস এর কারণে আবারও মিশন এক্সট্রিমের মুক্তি পিছিয়ে ২০২১ এর ডিসেম্বর দেওয়া হয়।
মিশন এক্সট্রিমের মুক্তির তারিখ রাখা হয় ৩ই ডিসেম্বর ২০২১।
মিশন এক্সট্রিম ও আমাদের সকলের প্রত্যাশা
যুগ পরিবর্তন হয়েছে তেমনি মানুষের রুচিও পরিবর্তন হয়েছে। বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের দর্শকের আবির্ভাব ঘটেছে।
যেমন অনেকেই চায় মাসালা মুভি কিংবা অনেকেই ধুমধাড়াক্কা মারামারি (মানে অ্যাকশন) , আবার অনেকেই পছন্দ করে রোমান্টিক স্টোরি ।
অনেকে আবার ক্রাইম থ্রিলার ভালোবাসে, কিংবা আমারমত সাইন্সফিকশন, সুপারহিরো জেনর লাভার৷
তবে এতো জিনিসের পরিবর্তন হলেও সত্যি বলতে আমাদের বাংলাদেশ এর চলচ্চিত্রের ধারা খুব একটা পরিবর্তন হয় নাই৷
মাঝে মধ্যে দুই একটা সিনেমা আশা জাগিয়েও পুরোপুরি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে নাই।
গল্প ভালো তো মেকিং খারাপ, পর্যাপ্ত পরিমাণে বাজেট নেই। সব ভালো তো টেকনিক্যাল সাইড অনেক দুর্বল ।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, দেশে “সিনেমা হলের” সংখ্যা কমে যাওয়া । এই হলের পরিমাণ কমে যাওয়ায় জন্য ব্যবসাও ঠিকমতো হয় না প্রায় সকল সিনেমারোই৷
সে যাই হোক মিশন এক্সট্রিম নিয়ে আমার প্রত্যাশা একটু বেশি। তবে আমরা যারা নিয়মিত কোরিয়ান, হলিউড কিংবা জাপানিজ কন্টেন্ট উপভোগ করি। তাদের মতো সিনেমা হবে এই আশা নিয়ে হলে গেলে ভুল হবে আমাদের।
যেখানে ডাল ভাত পাওয়া কষ্টসাধ্য সেখানে কাচ্চি বিরিয়ানি বিলাসিতা বলা চলে। কেন? যেখানে একটা হলিউডের মুভি কিংবা স্রেফ জাপানিজ এনিমি দেখি সেগুলি তৈরির জন্য হাজার কোটি টাকা বাজেট পিছনে রেখে দেয়।
সেখানে আমাদের এই পাচ কোটিরও নিচে বাজেট নিয়ে বানানো সিনেমা যে ওই হাজারো কোটি টাকা দিয়ে তৈরী কন্টেট এর সাথে পাল্লায় পারবে না সেটাতো একেবারে বাচ্চারাও বলতে পারবে।
তাহলে মিশন এক্সট্রিম কে কেন এতো স্পেশাল ভাবা হচ্ছে? এইতো বছর দু-এক আগে মুক্তি পাওয়া ‘দেবী’ সিনেমাটি অনেকটা আশা জুগিয়েছিল সাথে ওই আশা পূরণ ও করতে পেরেছিল।
ঠিক সে রকমই মিশন এক্সট্রিম ও বাংলার চলচিত্রের আশা জাগাচ্ছে। করোনাকালে যখন একের পর এক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তখনি এই আরিফিন শুভ এর মিশন এক্সট্রিম সিনেমাহল মালিকদের কাছে আশার আলো হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে এই মিশন এক্সট্রিম কতটা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে?? দেখার বিষয় এইটাই।
মিশন এক্সট্রিম মুভি রিভিউ (image credit: Cop Creation/ YouTube) |
মিশন এক্সট্রিমের গল্প
আমরা ইতোমধ্যেই ‘সানী সানোয়ার স্যার’এর ক্রাইম থ্রিলার নিয়ে লেখা “ঢাকা এটাক ও বিলাপ ওয়েব সিরিজ” দেখেছি৷ দুই টারই গল্প ভালো, ইউনিক এবং দর্শকমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
সানী সানোয়ার স্যার উনি পুলিশ ডিপার্টমেন্টে আছেন । তাই এই সকল বিষয়ে ওনার জ্ঞান যথেষ্ট।
অন্যদিকে শুভ’র বর্তমান স্ক্রিপ্ট চয়েস অনেক ভালো হচ্ছে। বছরের শুরুতেই কন্ট্রাক্ট নামে ওয়েব সিরিজে কাজ করেছে শুভ।
আশা করি ক্রাইম থ্রিলার নিয়ে আমরা আরো একটা অসাধারণ গল্পের সিনেমা পেতে যাচ্ছি৷
মিশন এক্সট্রিম ডিরেকশন
ডিরেক্টর সম্পর্কে বলতে গেলে এই মুভির দুই পরিচালকই বলা চলে অনভিজ্ঞ । যদিও এরা আগে বিলাপ ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন। এই বিলাপ সিরিজের গল্পও কিন্তু সানী সানোয়ার স্যার লিখেছিল।
সেখানে তারা অনেক মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে। তেমনি বেশ কিছু জায়গায় অদক্ষতা ও প্রভাব দেখেছি। যদিও সেগুলির জন্য বাজেট এর প্রভাব ও কিছুটা দায়ী ছিলো।
মিশন এক্সট্রিমে তারকাদের অভিনয়
অনেক আগে থেকেই শুভর অভিনয় নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। যদিও এখন সে অভিনয়ে অনেক উন্নতি করেছে। তার প্রমাণ কিছুদিন আগে জি৫ ফাইভে মুক্তি পাওয়া ‘কন্ট্রাক্ট’ ওয়েব সিরিজ।
মিশন এক্সট্রিমে শুভ এর সাথে আরো আছে ন্যাচারাল অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু, “ভিলেন রোল” নিজের নামে লিখে নেওয়া ‘মিশা সওদাগর’। অন্যদিকে মিস বাংলাদেশের বিজয়েতা “জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী” এর এক্টিং ক্যারিয়ার ডেবিউ।
সাথে আরো ও অনেক সুদক্ষ অভিনেতারাও আছেন।
জ্বি না তার কথা ভুলি নাই। তাসকিন ও আছে এই মিশন এক্সট্রিমে।
Mission Extreme সিনেমার টেকনিক্যাল সাইড
যেহেতু প্রথম মুভি ঢাকা এটাক হিট ছিল সে কারনে এর সিক্যুয়েলে যে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাজেট আছে তা সহজেই বলা চলে।
টিজার ট্রেলারের বিজিএম অনেক ভালো ছিল। তবে শেষের দিকে VFX এর মান একটু খারাপ ছিল। যায় হোক আশা করি ভিফিএক্সের এই সমস্যা টা যেন টেকনিক্যাল সাইডে প্রভাবিত না হয়।
মিশন এক্সট্রিমে পুলিশের যত স্পেশাল ফোর্স ছিল
আমরা ইতিমধ্যে সবাই জানি যে, মিশন এক্সট্রিম ঢাকা অ্যাটাক পরিবারের দ্বিতীয় কাজ। তবে সেই একই টিম নিয়ে কাজ করা হয়ে থাকলেও পুলিশের স্পেশাল ফোর্স ছিল ভিন্ন।
এর প্রধান উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, ঢাকা অ্যাটাকে ছিল DB (Detective Branch) এবং SWAT (Special Weapons And Tactics) টিম।
মূলত এরা সবাই CTTC (Counter Terrorism and Transnational Crime) এর অধীনে কাজ করে থাক
দেশ যত আধুনিক হচ্ছে ততই ক্রাইমের ধরন বাড়ছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এসব মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ কতটা প্রস্তুত আছে?!
তাই এসব ক্রাইম রুখতে কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ পুলিশ এর স্পেশাল ব্রাঞ্চ CRT (Crisis Response Team) গঠন করা হয়েছে।
CRT এর কাজ কি?
এই টিমের কাজ হচ্ছে জঙ্গি নির্মুল করা সাথে তাদের আটকে রাখা হস্টেজদের জীবন রক্ষা করা। সেইসাথে যেকোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম মোকাবেলা করতে, সব সময় প্রস্তুত থাকে এই টিম।
এই জন্য তারা খুব দ্রুততার সাথে তাদের কাজ পরিচালনা করে। এবার মিশন এক্সট্রিমে CRT এর স্পেশাল অফিসারদের দেখা যাবে।
মিশন এক্সট্রিমের টিজার এবং ট্রেলারে বাংলাদেশ পুলিশের, আরও একটি স্পেশাল ফোর্স কে দেখানো হয়েছে । HRT মানে (Hostage Rescue Team)। এই টিমের কাজ হাই অনেক রিস্কি।
HRT এর সদস্যরা সরাসরি জঙ্গির আস্তানার ভিতরে ঢুকে তাদের অস্তিত্ব শেষ করে । তবে হস্টেজদের রক্ষা করাই মূলত তাদের কাজ।
তাছাড়াও এই টিম পরিস্থিতি অনুযায়ী অনেক কৌশল অবলম্বন করে থাকে। মিশন এক্সট্রিমের ট্রেইলার ও টিজারে এই টিমের কাজ চোখে পড়েছে। যেখানে আরিফিন শুভকে দেখা গেছে একজন HRT এর সদস্য হিসেবে।
পুলিশ কিংবা যেকোনো বাহিনীর স্পেশাল ফোর্স এর সদস্য হওয়া এত সহজ না। তাদের কি রকম কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, সেইটা তারাই ভালো জানে।
এসব কিছুর দিকে লক্ষ্য রেখে পরিচালক হয়তো সে রকম কিছু আরিফিন শুভর কাছে চেয়েছিল।
যার কারণে আরিফিন শুভ জিম, বডি বিল্ড এর পিছনে অনেক সময় দিয়েছে। যার ফলে মিশন এক্সট্রিম মুক্তি প্রায় ৯ টা মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মিশন এক্সট্রিম মুভি ট্রেলার রিভিউ
Mission Extreme Movie All Law Force
মিশন এক্সট্রিমের ট্রেলারের ছিল রহস্য।
শুরুতেই দেখা যায়, আরিফিন শুভ কিসের যেন হিসাব মিলাচ্ছে! আচ্ছা হিসাব কি মিলাতে পারবে শেষ পর্যন্ত?।
আপনি যদি ভালো ভাবে লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন তাসকিন রহমানের পিছনে কিছু সার্কিট বোর্ড (ইলেকট্রনিকস এর ছাত্র নই আমি, তাই কিছু বুঝতে পারলাম না, কেউ বুঝিয়ে দিয়েন কমেন্ট এ?) দেখা যাচ্ছে।
আচ্ছা এইসব কিসের সার্কিট বোর্ড? তবে তাসকিন রহমানের লুকটা বেশ সুবিধার মনে হছে না।
ভুত দেখার মত চমকে গেছে জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীর তাই তার চোখ কপালে উঠে গেছে।
সাদিয়া নাবিলার বড় বড় চোখ কেন! বড় বড় চোখ তো মনোজ প্রামানিকেরও কিন্তু কেন এমন! সুমীতও বেশ ভয় পেয়ে আছে ।
Dhaka Attack 2 Movie review
মিশন এক্সট্রিম মুভি রিভিউ (image credit: Cop Creation/ YouTube) |
অন্যদিকে শুভ কার পিছনে যেন ছুটছে?
তবে সবশেষে বড় প্রশ্ন রাইসুল ইসলাম আসাদকে কে গুলি করলো?
সমাধান হয়তো আপনি সিনেমা হলেই পাবেন। কিন্তু তার আগে এক ঝলক দেখতে পারলাম ২৪ অক্টোবর এর ট্রেলারে।
আর যতটুকু দেখাইছে এর মধ্যে যে বিজিএম ছিল তা অনেকটা ভালো লেগেছে। আশা করছি অপেক্ষার ফল যেন মিষ্টি হয় ।
এখন শুধু অপেক্ষা ৩ ডিসেম্বরের । শুভ কামনা রইল মিশন এক্সট্রিম টিমের জন্য।
Source: মিশন এক্সট্রিম Wikipedia page । মিশন এক্সট্রিম imdb page
Mission Extreme full movie,
mission extreme full movie download,
mission extreme full movie download 1080p,
mission extreme full movie download 720p,
Mission Extreme full movie Download Link,
mission extreme full movie watch online,
mission extreme imdb,
mission extreme mlwbd,
mission extreme movie song,
mission extreme release date,
অপারেশন সুন্দরবন,
আরিফিন শুভ মুভি,
আরেফিন শুভ কোন ধর্মের,
ঐশীর জীবনী,
জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী,
ঢাকা অ্যাটাক,
তাসকিন রহমান,
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক,
মিশন এক্সট্রিম,
মিশন এক্সট্রিম হল লিস্ট
মিশন এক্সট্রিম মুভি রিভিউ
[ বিঃদ্রঃ আমি পুলিশ কিংবা অন্য কোনো বাহিনীর সাথে জড়িত না । তাই তথ্য গুলো ভুল হতেই পারে । এজন্য ক্ষমার চোখে দেখবেন। সম্ভব হলে কমেন্ট সেকশনে ভুলগুলি শুধরিয়ে দিবেন। ]