Marvel Pulp to Pop Review

marvel from pulp to pop - Marvel Pulp to Pop Review
Documentary: Marvel 75 Years, From Pulp to Pop [2014]
Narrator: Emily VanCamp
Director: Zak Knutson
Production House: abc
#Spoiler_Alert 
…..
২০০৮ সালের ২ মে মুক্তি পেয়েছিলো ‘Iron man’. এই দিনেই শুধুমাত্র Marvel Cinematic Universe নয়, একইসাথে জন্ম হয়েছিলো Marvel Studio’s নামে আজকের দিনের সবচেয়ে সফল ও Fan Loved প্রডাকশান হাউজটিরও। ভাবতে অবাক লাগে, মাত্র ১৪ বছর আগে Marvel Comics তাদের নিজস্ব প্রডাকশান হাউজ তৈরী করে মুভি বানাতে শুরু করেছিলো। অথচ বয়স হিসাব করলে Marvel Comics এর বর্তমান বয়স ৮৩ বছর।১৯৩৯ সালে ভিন্ন নামে যাত্রা শুরু করা Marvel Comics এর ৭৫ বছর বর্ষপূর্তী হয় ২০১৪ সালে। সে সময় আমেরিকান টিভি নেটওয়ার্ক abc এই উপলক্ষে একটি ডকুমেন্টারি তৈরী করে। MCU’র পাওয়ার ব্রোকার শ্যারন কার্টার অর্থাৎ এমিলি ভ্যানকাপের উপস্থাপনায় মাত্র ৪১ মিনিটের এই ডকুমেন্টারিটি এক কথায় ফ্যানদের জন্য অমূল্য আকর খনি।
বিশেষত ২০১৪ সালে যখন সদ্যই Gurdian of the Galaxi মুক্তি পেয়ে সে বছরের সেরা বক্স অফিস কালেকশান করেছে; মাত্রই MCU’র ফেইজ ১ শেষ হয়েছে; ২য় এভেঞ্জার্সের কাজ চলছে; শুটিং শুরু হয়েছে অ্যান্ট ম্যানের; এজেন্ট অফ শিল্ডের ২য় সিজন, এজেন্ট কার্টারের ১ম সিজনের কাজ চলছে; Netflix এর সাথে মার্ভেলের ৪টি R Rated ক্যারেক্টারকে লাইভ একশানে আনার ঘোষণা দেয়া হয়েছে; স্টুডিও প্রেসিডেন্ট কেভিন ফাইগি তখনো মার্ভেল এন্টারটেইনমেন্টের বিধি নিষেধ থেকে মুক্ত হতে পারেন নি—ঠিক সে সময় দাঁড়িয়ে ৭৫ বছর পুরনো ইতিহাসকে রিকল করে ভবিষ্যতের জন্য কি কি পরিকল্পনা তারা করছে সেই কথাগুলো ২০২২ এর বর্তমানে দাঁড়িয়ে দেখতে সত্যিই এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি সৃষ্টি করেছে।
Marvel Pulp to Pop Review
সংক্ষিপ্তরূপে মার্ভেল ইতিহাসঃ
১৯৩৯ সালে নিয়র্কে Timely Comics নামে একটি পাবলিশিং হাউজ প্রতিষ্ঠা করেন ‘মার্টিন গুডম্যান’। ২য় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পূর্ব মুহুর্তে স্টোরি রাইটার হিসেবে ‘স্ট্যান লি’ এবং কমিক আর্টিস্ট হিসেবে ‘জ্যাক কিরবি’ এতে যোগদান করেন। সে সময় জাস্ট ‘হিউমেন টর্চ’ নামক একটি সুপারহিরো কমিকের মধ্য দিয়ে তারা নিজেদের আর্টিস্টিক রূপ প্রকাশ করতে শুরু করেন।পার্ল হারবার ট্রাজেডির পর দেশাত্মবোধ ও আমেরিকান হিরোর রূপে ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’ Timely Comics এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে তুলে দেয়। শিশু কিশোরদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগানোর জন্য তৈরী হলেও সে সময়কার আমেরিকান সৈনিকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’। মূলত ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈনিকদের হাতে হাতে নানা দেশের নানা বন্দরে কমিক বুক ইস্যু পৌঁছাতে শুরু করেছিলো। কিন্তু কমিক বুকের এই জনপ্রিয়তা ২য় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার সাথে সাথে একদম নিচে নেমে আসে।
.
এর কারণ ছিল আমেরিকান প্যারেন্টসরা কমিক বুকের ভায়োলেন্স ও সেক্সিজম নিয়ে শিশুদের মধ্যে কি প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে চিন্তিত হওয়া। এই আগুনে ঘি ঢালে ফ্রেডরিক ওয়ার্থম্যান নামে এক গবেষকের একটি বই ‘Seduction of Innocence’। এই বইতে দেখানো হয় কিভাবে কমিক বুক শিশু কিশোরদের মনে বাজে প্রভাব ফেলছে। ব্যাপারটা এতদূর পর্যন্ত গড়ায় যে, আমেরিকান সিনেটে পিটিশন বসে। সেখান থেকে হয় কমিক কোড অথরিটির সেন্সরশিপ সিদ্ধান্ত। কালি কলম রঙ্গে আঁকা ক্যারাকটারের ওপর যথেচ্ছার সেন্সরশিপ পাবলিক ইমেজেও আর্টিস্ট রাইটারদের নিচু করে। নিজেদের ইমেজ বদলানোর জন্য ১৯৫১ সালে Timely Comics থেকে নাম পাল্টে কোম্পানির নাম রাখা হয় ‘Atlas Comics’.
.
এই সময়েই Atlas Comics এ যোগদান করেন লিজেন্ড ‘স্টিভ ডিকটো’। কিন্তু এতেও তেমন লাভ হয় না। যত্রতত্র সেন্সরশিপের ফলে নির্দিষ্ট একটি সুপারহিরো চরিত্রের বদলে সিঙ্গেল সিঙ্গেল উপন্যাসের মত স্টোরি বুক বের করতে শুরু করে Atlas Comics. কোনটা হরর, কোনটা ফ্যান্টাসি, কোনটা ট্রাজেডি, কোনটা ফ্যান্টাসি। ক্যাপ্টেন আমেরিকা’র এই সময়কার ইস্যুগুলো ‘Weird’ ট্যাগ লাইনে আজো পাওয়া যাবে। জাস্ট ‘মার্টিন গুডম্যানে’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একের পর এক রঙিন ছবিওয়ালা গল্পের বই লিখে যান স্ট্যান লি। তাতে আঁকার কাজ করতে ‘স্টিভ ডিকটো ও জ্যাক কিরবি’। বলে রাখা ভাল এই সময়টাতে কমিক রাইটারদের সম্মান বলতে কিছু ছিল না। তাই লোকলজ্জ্বায় নিজের মূল নাম ‘স্ট্যানলি লিবার’ থেকে শুধু মাত্র ‘স্ট্যান লি’ নামে স্বাক্ষর করতেন কমিক বুকে। কিন্তু এই সবকিছু পাল্টে যায় ১৯৬১ সালে। স্ট্যান লি কমিক বুক ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও তাঁর স্ত্রীর কথায় শেষ বারের মত একটা চেষ্টা করে এক সুপারহিরো ফ্যামিলির গল্প লিখেন- নাম ‘ফ্যান্টাসটিক ৪’। এই গল্পে নিজের মনের মাধুরী মিশিয়া কার্টুন আঁকেন ‘জ্যাক কিরবি’। ব্যাস আর কোম্পানিকে পায় কে। নাম পাল্টে পাবলিশিং হাউজটির নাম রাখা হয় ‘মার্ভেল কমিক্স’। নতুন এই সুপারহিরো পরিবারের জনপ্রিয়তা ‘মার্টিন গুডম্যান’কে সাহসী হতে সাহায্য করে। তিনি তাঁর ক্রিয়েটিভ টিমকে নিজের মনের খুশি মত চরিত্র আঁকতে স্বাধীনতা দেন। শুরু হয় এক নতুন মহাকাল
.
স্ট্যান লি
জ্যাক কিরবি
স্টিভ ডিকটো
এই ৩ জন মিলে পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যে তৈরী করেন হাল্ক, স্পাইডার ম্যান, থর, অ্যান্ট ম্যান, আয়রন ম্যান, ডক্টর স্ট্রেঞ্জ, সার্জেন্ট ফিউরি, এজেন্ট অফ শিল্ডস, এভেঞ্জার্স, এক্স ম্যান। শুধু এই প্রধান চরিত্রগুলোই নয়, এদের সাথে জড়িত ভিলেন ও পার্শ্বচরিত্রসহ প্রায় সহস্রাধিক ক্যারেক্টার। শুরু হয় মার্ভেল কমিক্সের উত্থান। ১৯৭২ সালে ‘মার্টিন গুডম্যানে’র অবসরের পর মার্ভেল কমিক্সের দায়িত্ব নেন ‘স্ট্যান লি’। তিনি সে সময় আমেরিকান রাজনীতির হালচাল বুঝে ‘কমিক কোড অফ অথরিটি’র সাথে বিদ্রোহ করে সেন্সরশিপ ছাড়া কাজ করতে শুরু করেন। সেই ক্রিয়েটিভ ফ্রিডমের পর আজ পর্যন্ত কমিককে কেউ সেন্সরে বাঁধে নি। এই সময় কমিক থেকে টিভি এনিমেশন ও টিভি লাইভ একশানে নানা সিরিজ শুরু হয়। ৭০ এর দশকেই ফিমেল লিড সুপার হিরো ও বর্ণবাদ বিরোধী কন্টেন্ট প্রকাশ করতে শুরু করে মার্ভেল। ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ ১ম মার্ভেল ব্ল্যাক সুপারহিরো হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ৮০’র দশকটা ছিল এন্টি হিরোদের। লোগান, ডেডপুল, ভেনম, পানিশার, ডেয়ারডেভিল, থ্যানোস এদের জনপ্রিয়তা আকাশ চুম্বি হয়। এই দশকেই প্রথমবারের মত DC’র স্টককে ছাড়িয়ে যায় মার্ভেল। কিন্তু এরপরেই পতন।
……
সফলতার এত উচ্চকাশ থেকে  ৯০ এর দশকে কিভাবে দেউলিয়া হয়ে গেল মার্ভেল কমিক্স সেই ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। খুব পরিষ্কার করে কিছু বলা হয় এই ডকুমেন্টারিটিতেও। জাস্ট সিনেমাটিক মুভমেন্টে বলা হয়েছে ‘একজন সুপারহিরো তখনই স্বার্থক হয় যখন পরাজয়ের পতন থেকে আবার সফল ভাবে পুনরুত্থান হয় তার’। এই ক্ষেত্রে মার্ভেল কমিক্সকে যদি সেই কাহিনীর প্লট ধরি তবে নিঃসন্দেহে সেকেন্ড হাফের নায়ক হলেন ‘কেভিন ফাইগি’। ফক্স ও সনি’র মার্ভেল মুভিজের সফলতায় কিভাবে নিজেরাও টাকা ম্যানেজ করে ‘আয়রন ম্যান’ মুভি বানাতে শুরু করেছিলেন সেই গল্প ছোট্ট করে বলা হয়েছে এখানে। মার্ভেল কমিক্সের জনপ্রিয় ক্যারাক্টারদের তুলনায় বি ক্যাটাগরির ‘আয়রন ম্যান‘ সেই চরিত্রে আবার অভিনয় করছেন ড্রাগ একিউস্ট ‘রবার্ট ডাউনি জুনিয়র‘। সব বিজনেন্স এনালাইসিসদের থিওরিকে ভুল প্রমাণ করে MCU‘র সফল যাত্রাপথের মূল রহস্যটা হল কেভিন ফাইগির ক্রিয়েটিভ ফ্রিডম আর নিদারুণ ফ্যান সার্ভিস। সেই ২০১৪ সালেই মার্ভেল এক্সিকিউটিভরা এই ডকুমেন্টারিতে সেটা স্বীকার করেছেন প্রায় অকপটে। তবে রিস্ক যে তারা নেন সবসময়, সেটা প্রথমেই দেখানো হয়েছে। ২০১২ সালের কমিক কনে যখন ‘গার্ডিয়ান্স অফ দ্যা গ্যালাক্সি’র ঘোষণা করেছিলেন ফাইগি তখন রীতিমত ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে বিদ্রুপ আর ব্যর্থতার রি রি পড়ে গিয়েছিলো। কথা বলা র‍্যাকুন আর হাঁটাচলা করা গাছের মুভি কে দেখবে? মার্ভেলের প্রথম ডিজাস্টার! এমনই শিরোনামে হেডলাইন করেছিলো নানা ম্যাগাজিন। কিন্তু ক্রিয়েটিভ ম্যাজিকে যখন গার্ডিয়ান্স ফ্যানদের মাঝে হাউজহোল্ড নামে পরিণত হয় সে সময় মার্ভেল এক্সিকিউটিভদের মাঝে ‘ফ্যানদের খুশি করে আমরা যা খুশি তাই বানাতে পারি’ এই কনফিডেন্সের ঝলক খুব স্পষ্ট করে ফুটে ওঠে; এবং তা আজো সেই রকমই আছে।
.
Marvel 75 Years, From Pulp to Pop এর শেষে আমাদের যা আশার বাণী দেয়া হয়েছিলো তা আজ স্পষ্টভাবে পরিষ্ফুট। ২০২২ এর মে মাস পর্যন্ত ২৮টি ইন্টার কানেক্টেড নিজস্ব সিনেমা ও ৬টি টিভি সিরিজ, ২১টি শেয়ার্ড ইউনিভার্সের সিনেমা ও ৬টি সিরিজ এবং ৫টি ওয়ান শট নিয়ে Marvel Cinematic Universe সর্বকালের সর্ব্ববৃহৎ সফল Fan Service Content House হিসেবে সমাদৃত। এবং মহাবিশ্বের মতই এই সীমানা বিস্তৃত হচ্ছে
হয়েই যাচ্ছে
আশা করি মার্ভেলের শততম বর্ষপূর্তী নিয়ে বানানো ডকুমেন্টারির রিভিউও এইভাবে লিখতে পারব কোন একদিন। সেই প্রত্যাশায় Happy Watching …

Leave a Comment

Total Views: 335

Scroll to Top