Everything Everywhere All at Once মুভি রিভিউ

মুভির মূল গল্পটা বলব না, জাস্ট মাল্টিভার্সের কিছু নিয়ম কানুন ও মুভির ফিলোশপিটা এক্সপ্লেইন করব। Everything Everywhere All at Once মুভির এক্সিউটিভ প্রডিউসার ‘রুশো ব্রাদার্স’। হয়তো মার্ভেলের মাল্টিভার্স কন্সেপ্ট জেনেই সেখানে যা যা পসিবল ছিল না তা তারা ঢেলে দিয়েছেন এই মুভিতে। 
……
Movie: Everything Everywhere All at Once
Director: Daniel Kwan, Daniel Scheinert
#Light_Spoiler
প্লটঃ
‘ইভলিন’ একজন চীনা ইমিগ্র্যান্ট, আমেরিকান প্রবাসী। মধ্য বয়সী নারী। সেই প্রথম যৌবনে প্রেমিক ‘ওয়েমন্ডে’র হাত ধরে নিজ পরিবার, ঘর, বাবা ও দেশ ছেড়ে চলে এসেছিলো সে। স্বামীর সাথে লন্ড্রি বিজনেস করে সে। পাশাপাশি চাইনিজ পিঠ মালিশ, ক্যারিওকি সঙ্গীত চর্চা ইত্যাদি পার্ট টাইম কাজ করেও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে ‘ইভলিন’। 
Everything Everywhere All at Once Movie Review মুভি রিভিউ
(image credit: A24)
ইভলিন ও ওয়েমন্ড দম্পতির এক কন্যা – ‘জয়’। যেহেতু জন্ম আমেরিকায়; আমেরিকান কালচার এডাপ্ট করে সে পুরোদস্তুর সেখানে মিশে গিয়েছে। ‘বেকি’ নামে এক বান্ধবীর সাথে লেসবিয়ান সম্পর্কে আবদ্ধ ‘জয়’। টিপিকেল ইস্ট এশিয়ান মানসিকতায় ‘ইভিলিন’ তাদের সম্পর্কটা মন থেকে মেনে নিতে না পারলেও আমেরিকায় আছে বলে স্বাধীন সন্তানকে তেমন কিছুই বলতে পারে না সে।
 যদিও গতানুগতিক এশিয়ান কালচারের মত প্রেয়সী বধূ হিসেবে ‘ইভলিন’ নিজেও থাকে না। সংসারের কাঠামোটা খুব স্পষ্ট। ‘ওয়েমন্ড’ একজন দুর্বল চিত্তের ইমোশনাল, বোকাসোকা সরল পুরুষ; সংসারের যাবতীয় সিদ্ধান্ত, হিসেব-নিকেশ সব ইভিলিনই করে। ‘ওয়েমন্ড’ জাস্ট তার সহচর। কিন্তু যৌবনের সেই ঘর পালানো প্রেমে এখন ভাটা পড়েছে। ‘ওয়েমন্ড’কে ডিভোর্স দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘ইভলিন’। 
এদিকে ঘর ছেড়ে আসায় দীর্ঘদিন রাগ করে থাকা ইভলিনের বাবা ‘গং গং’ এখন বার্ধক্যে পতিত। মেয়ের সাথে রাগ কমিয়ে তাদের দেখতে আমেরিকায় এসেছেন তিনি। বাবার সম্মানে আজ রাতে একটা পার্টির আয়োজন করেছে ‘ইভলিন’। সেই পার্টিতেই ‘জয়’ চাচ্ছে তার বান্ধবীকে নানার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। 
কিন্তু ‘ইভলিন’ ব্যপারটা মেনে নিচ্ছেন না। তার মতামত হল আমেরিকায় থাকে বলে মা হিসেবে তিনি মেনে নিচ্ছেন কিন্তু বৃদ্ধ ‘গং গং’ এসব বুঝবেন না। তাই তাকে জানানোর দরকার নেই। ব্যাপারটা নিয়ে মা-মেয়ের মধ্যে মানসিক সংঘর্ষ চলছে। এদিকে যেদিন এই পার্টির আয়োজন সেদিনেই তাদের ট্যাক্স রিপোর্ট প্রদান করার দিন। 
ইভলিন, ওয়েমন্ড, গং গং মিলে IRS অফিসে ট্যাক্স রেভিনিউ জমা দিতে যায়। ইভলিনের প্লান হল যত দ্রুত সম্ভব ট্যাক্সের কাজ শেষ করে বাবাকে নিয়ে পার্টিতে যাবে। কিন্তু এরমধ্যেই খুলে যায় মাল্টিভার্সের পোর্টাল।
মাল্টিভার্সঃ
Everything Everywhere All at Once মুভির মাল্টিভার্সের কনসেপ্টটি খুবই কমন এবং সহজ। আমাদের দুনিয়ার মতই আরো অসংখ্য প্যারালাল দুনিয়া আছে। সেই দুনিয়াতেও আমাদের সবার একেকজন রেপ্লিকা আছে। তাদের জীবন যাপন, আচার ব্যবহার, সম্পর্ক, জীবন যুদ্ধের মধ্যে দূরত্ব অনুযায়ী সামঞ্জস্যতা নির্ভর করে। 
কিন্তু পুরোপুরি এক নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্য ইউনিভার্সের কোন রেপ্লিকা এই ইউনিভার্সের কারোর কোন সিদ্ধান্তের বিপরীত কাজ করলে তার দুনিয়াটাই সেখানে পুরো পাল্টে যায়। এক ইউনিভার্স থেকে অন্য ইউনিভার্সের প্রকৃতিগত মিল-অমিলও প্রচুর। EEAAO মুভির ক্ষেত্রে ‘ইভলিনে’র রানিং ইউনিভার্স থেকে অনেক দূরের এক ইউনিভার্স যার নাম এখানে বলা হয়েছে ‘আলফা ইউনিভার্স’- সেই ইউনিভার্সের ‘আলফা ইভলিন’ একজন প্রতিভাবান, উচ্চাকাঙ্ক্ষী বিজ্ঞানী। 
সেই ‘ইভলিন’ মাল্টিভার্স ট্রাভেলের প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে। মুভিতে প্রযুক্তিটিকে বলা হয়েছে ‘ভার্স জাম্পিং’। এই ভার্স জাম্পিংয়ের মাধ্যমে এক ইউনিভার্সের কেউ অন্য ইউনিভার্সে সশরীরে যেতে পারে না; বরঞ্চ অন্য ইউনিভার্সের তার যে রেপ্লিকা আছে তার শরীরে ভর করতে পারে। অনেকটা ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ ২’ মুভিতে দেখানো ডেড ওয়াকের মত বা জ্বীন ভূতে আছর করার মত। ‘ভার্স জাম্পিং’ যে করছে সে অন্য ইউনিভার্সের রেপ্লিকার সমস্ত স্মৃতি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পেয়ে যাবে। 
অন্য রেপ্লিকাটিকে সেই নিয়ন্ত্রণ করবে। সেই রেপ্লিকাটির নিজস্ব স্মৃতি এই সময় থাকবে না; এবং সে বুঝতেও পারবে না- কিভাবে সে একস্থান থেকে আরেক স্থানে মুভ করছে বা তার সাথে কি হচ্ছে? অনেকটা আমরা আমাদের নিজের জীবনে কিছুক্ষণের জন্য কোন কাজ করার মাঝেই হঠাৎ হারিয়ে যাই না? আবার অল্প পরে সৎবিৎ ফিরে পাই-অনেকটা সে রকম।
EEAAO মুভিতে আমরা ‘ইভলিন’ চরিত্রটির মাধ্যমে কমন সাধারণ ইউনিভার্সের পাশাপাশি অনেকগুলো উইয়ার্ড জগতও দেখতে পাই। কোথাও সে আমাদের দুনিয়ার মতই ট্যাক্স, ব্যবসা, স্বামীকে নিয়ে অসুখী জীবন পার করছে; কোথাও সে তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে ফেলেছে । 
কোথাও সে যৌবনেই তার ‘ওয়েমন্ড’ বিএফকে ডাম্প করে নিজের জীবনে এক সাকসেসফুল কারাটে মাস্টার অভিনেত্রী; কোথাও সে একজন কুক; কোথাও সে একজন ২ডি এনিমেশন ক্যারাক্টার; কোথাও সে পাপেট; কোন এক ইউনিভার্সে মানুষের হাতের জায়গায় হটডগ, যেখানে সবাই পা দিয়ে কাজ করে; আবার কোন এক প্রাণশুণ্য ইউনিভার্সে সে শুধুই একটা পাথর।
এক ইউনিভার্স থেকে অন্য ইউনিভার্সে ট্রাভেল করার জন্য কিংবা অন্য কোন রেপ্লিকার উপর ভর করার জন্য কিছু উইয়ার্ড কাজকর্ম করতে হয়। কিছুটা সুইচ অন করার মত। মানে যে চাইছে আমি অমুক ইউনিভার্সে আমার অই রেপ্লিকার উপর ভর করব। 
তাকে তার নিজ শরীরের সাথে লিংক করানোর জন্য কিছু ‘অদ্ভুতুড়ে কাজকর্ম’ করতে হয়- যেমন ধরুন পেপার কাটের মাধ্যমে নিজের আঙ্গুল কাটা, নিজের হাতের একটা অংশ ভাঙ্গা, কাউকে মন দিয়ে আই লাভ ইউ বলা, অরেঞ্জ জুস পান করা, নিজের পশ্চাৎদেশে সুচালো কিছু প্রবেশ করানো ইত্যাদি। 
আমি লেখাটা লেখার সময় বা আপনারা পড়ার সময় যেমন স্টুপিড ফিল করছেন; মুভিটা দেখার সময় দর্শক হিসেবেও কখনো কখনো স্টুপিড ফিল হবে। যেহেতু আমি ‘লাইট স্পয়লার’ বলেছি তাই মুভিটা মাল্টিভার্সের পোর্টাল খোলার পর কোনদিকে গল্পে এগোয়, কি কি রিভিল হয়, গল্পের সাংঘর্ষিকতা কোথায় তা লিখছি না- চলুন ফিলোশপিতে যাই
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঝে একটা দেয়ালিকা আছে, যেখানে লিখা “Sad Generation with Happy Face”. অদ্ভুত বিষয় হল আমি EEAAO দেখার সময় এই করুণ সুরটা অনুধাবন করেছি, বিশেষত সেকেন্ড হাফে। কিন্তু EEAAO মুভিটা কিন্তু বেশ একটা চাইনিজ মার্শাল আর্টে ভরপুর মাল্টিডাইমেনশনাল সাইফাই একশান প্যাক ডার্ক কমেডি। 
আপনারাই বলুন- “টেনিস কোর্টের পোষাক পড়া এক টিনেজার মেয়ে দু হাতে দুটো লম্বা স্কিন কালারের ‘ডিল্ডো’ দিয়ে একজনকে কয়েকটা পুলিশকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলছে” কিংবা “একজন মাঝ বয়সী মার্শাল আর্ট এক্সপার্টের সঙ্গে দু জন যুবক ধুমধাম একশান করছে- দুই যুবকই নিজের প্যান্ট খুলে দুটো লোহার সুচালো বস্তু নিজের পশ্চাতদেশে ঢুকিয়ে রেখেছে” এগুলো আপনার ডার্ক ও গ্রিটি সেন্সে হাসির উদ্রেক করবে না? 
কিন্তু এমন একটা উইয়ার্ড মুভির শেষটা যদি হয় “নিজের পরিবারের সাথে কথা বলা; নিজ পরিবারের যে সদস্যটি যেমনই হোক না কেন, সর্বদা তাকে জানানো যে আমি তোমার পাশে আছি” তাহলে কেমন লাগে? ডমিনিক টোরেটোর ‘ফ্যামিলি ভ্যালু’র ওভার দ্য টপ মেলোড্রামাটিক টোনে নয়, রিয়েল লাইফ সিমপ্লিসিটিতে এই ক্লিশে পারিবারিক সংলাপগুলো কেমন লাগে আপনাদের? আমরা আমাদের জীবনের গোপন দুঃখ কষ্ট, যাতনা, চেতনা সব আমাদের বন্ধুদের বলে বেড়াই।
 স্বল্প পরিচিত আগন্তুকদের বলি। এমনকি টাকা দিয়ে থেরাপিস্টকেও বলি। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে আপনজন, যার মাধ্যমে আমাদের জন্ম সেই মা-বাবাকে বলি না। আমরা রাস্তাঘাটে ইমোশনাল ব্রেকডাউন হয়ে সবার সামনে বিব্রত হতে পারি;
 কিন্তু আমার মা-বাবা আমাকে কিভাবে যেন জাজ করে সেই চিন্তায় বিভোর থাকি। আমরা ক্ষমতার সর্বোচ্চ সীমাতে চলে গেলেও আমার মা কিংবা বাবা সেই ক্ষমতাটুকু দেখে ভ্যালিডেশন দিচ্ছে কিনা। 
যার মাধ্যমে আমাদের দুনিয়ায় আসা, যাদের সাথে দুনিয়াতে জীবনটা পার করা- তাকেই আমরা পাত্তা দেই না, তাদের পুরো ভ্যালু আমরা খেয়াল করি না, তাদের মনের দিকটা আমরা জানিনা। এটা শুধু সন্তানের দিক থেকে নয়; বাবা মায়ের দিক থেকেও। বাবা মা বোঝেন না, তাদের সময়ের চিন্তা চেতনা থেকে যুগটা কতটা এগিয়ে আছে? 
সন্তানেরাও বোঝে না, জীবনভর একটা ভাবনায় আটকে থাকা মানুষ হঠাৎ করেই যুগের হাওয়ায় এক নিমেষে পাল্টে যেতে পারেন না। স্ত্রী টি বোঝেন না, তার হাবাগোবা স্বামীটির সারল্যের মূল্য কি? স্বামীটি বোঝেন না, তার সদা কর্কশ কঠিন স্ত্রীটির মনের ভিতরটা কতটা ভঙ্গুর?
EEAAO মুভি আমাদের বলছে- আপনি আপনার পরিবারের সদস্যদের চিন্তাটা বুঝছেন না তাতে সমস্যা নেই; কিন্তু আপনার চিন্তার সাথে সে মিলছে না বলে তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিবেন না। সে সরল হোক, বোকা হোক, কর্কশ হোক, খুঁতখুঁতে হোক, বদরাগী হোক, স্ট্রেট হোক, সমকামি হোক, চাকরি করুক বা বেকার থাকুক, সংসার করুক বা ডিভোর্সী- আপনার পরিবারের সকল সদস্য যেন জানে; সে একা নয়!
তার মনের কষ্ট আপনি বুঝতে পারছেন না, কিন্তু সে যেন আপনার সাথে কথা বলতে পারে। আপনি জানেন তিনি আপনার ব্যাপারটা বুঝবেন না, কিন্তু তাও আপনি আপনার পরিবারের সাথে কথা বলবেন। জাস্ট নিজের মনের গোপন কথাটা নিজ পরিবারের সামনে তুলে ধরতে পারলেই আমাদের অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। 
কিন্তু আমরা পরিবার চ্যূত হবার আশঙ্কায় নিজের ভেতরে অনেক কিছু পুষে রাখি। যা আমাদের ব্ল্যাক হোলের মত শূণ্যতায় টেনে নিয়ে যায়। যদি আমরা এই ভরসা পেতাম যে- ‘আমি যেমনই হই না কেন, আমার ফ্যামিলি আমার পাশে আছে’ তাহলে আমাদের জীবনটা অনেকটা সুন্দর হত।
 Everything Everywhere All at Once মুভিটির লাস্ট ক্রেডিট আমাদের এই শিক্ষা দেবারই চেষ্টা করে।
ক্রেডিটঃ মোঃ খাইরুল বাশার বাধন ভাইয়া।

DMCA Notice:- All OUR Posts Image are Free and Available On INTERNET Posted By Its Rightful Owner or Somebody Else. I’m Not VIOLATING Any COPYRIGHT LAW by Sharing a Movie or Tv Show/Web Series Trailer ScreenShot or Scenes. It's simply Fair Usage of Work. While Writing Movie/Series Breakdown Review.
I am Simply Promoting and Marketing Those Copyrighted Owner Property. But If You think something on this post is VIOLATING the Copyright LAW, Please Notify US via This CONTACT us FORM. So That It Can Be Removed from our Website.

Disclosure: This post May contain affiliate links that support our Blog. When you purchase something after clicking an affiliate link, we may receive a commission. Also Note That We Are Not Responsible For Any Third-party Websites Link Contents. For more Read Our Terms and Conditions Thank You.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top